রেজিষ্ট্রেশন করুন

লগইন করুন

Lost Password

Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.

লগইন করুন

রেজিষ্ট্রেশন করুন

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit.Morbi adipiscing gravdio, sit amet suscipit risus ultrices eu.Fusce viverra neque at purus laoreet consequa.Vivamus vulputate posuere nisl quis consequat.

আদা খাওয়ার ৫টি স্বাস্থ্য উপকারিতা (বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত)

শীতের দিনে গরম আদা-চা হোক বা রান্নায় মশলার ঝাঁজ আদা (বৈজ্ঞানিক নাম: Zingiber officinale) আমাদের রান্নাঘরের অতি পরিচিত একটি উপাদান। কিন্তু শুধু স্বাদ আর ঘ্রাণেই নয়, আদার রয়েছে প্রাচীনকাল থেকে ব্যবহৃত চিকিৎসাগুণ। আধুনিক বিজ্ঞানও এখন সেই গুণাগুণের প্রমাণ দিচ্ছে।

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, আদা শরীরের নানা সমস্যায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। বমিভাব কমানো থেকে শুরু করে ঠান্ডা-সর্দি উপশম, প্রদাহ কমানো, হার্ট সুস্থ রাখা এমনকি মস্তিষ্ক ও ক্যানসারের ক্ষেত্রেও সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে।

চলুন জেনে নিই আদার ৫টি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য উপকারিতা।

১. বমিভাব ও বমি কমাতে আদা

বিভিন্ন ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে প্রমাণিত হয়েছে যে আদা বমি ও বমিভাব কমাতে সহায়ক। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় বমিভাবে (Morning sickness) এটি বেশ কার্যকর। অল্প পরিমাণে আদা সুরক্ষিত এবং অনেক ক্ষেত্রেই সাধারণ অ্যান্টি-নজিয়া ওষুধ কাজ না করলে আদা ভালো বিকল্প হতে পারে।

  • কেমোথেরাপি নেওয়া রোগীদের ক্ষেত্রেও আদা কিছুটা উপশম দিতে পারে।
  • যাত্রাবমি বা অস্ত্রোপচারের পরের বমিভাবের ক্ষেত্রে ফলাফল মিশ্র হলেও অনেকেই উপকার পান।
  • বিজ্ঞানীরা মনে করেন, আদা পাকস্থলী ও মস্তিষ্কের উপর কাজ করে বমিভাব নিয়ন্ত্রণ করে। এটি হজমে গ্যাস ও ফাঁপাভাবও কমাতে সাহায্য করে।

২. প্রদাহ ও সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আদা

আদায় রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান, যেমন জিঞ্জারল (Gingerol) ও শোগাওল (Shogaol)।

  • গবেষণায় দেখা গেছে, আদা বিশেষ করে অটোইমিউন রোগ (যেমন লুপাস, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস) এর প্রদাহ কমাতে পারে।
  • আদা শ্বেত রক্তকণিকার অতিরিক্ত সক্রিয়তা কমায়, যা শরীরে ক্ষতি ডেকে আনে।
  • এছাড়া, আদার অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল গুণ ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস প্রতিরোধে সাহায্য করে। তাই ঠান্ডা-সর্দি, গলা ব্যথা বা ফ্লু-এর সময় আদা-চা খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়।

৩. ব্যথা কমাতে আদা

আদার ব্যথানাশক ক্ষমতাও বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত।

  • হাঁটুর ব্যথা ও অস্টিওআর্থ্রাইটিস: কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, আদার নির্যাস নিয়মিত খেলে হাঁটুর ব্যথা ও জড়তা কমে।
  • পেশির ব্যথা: নিয়মিত ব্যায়ামের পর পেশির ব্যথা ও ক্লান্তি কমাতে আদা সহায়ক হতে পারে।
  • মাসিকের ব্যথা: আদা অনেক ক্ষেত্রে আইবুপ্রোফেনের মতো ওষুধের সমান কার্যকরভাবে মাসিকের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।

আদা শরীরের ব্যথা কমায় মূলত নার্ভাস সিস্টেমের ব্যথার সংকেতকে দমন করে এবং প্রদাহ সৃষ্টিকারী রাসায়নিককে (Prostaglandins, Leukotrienes) নিয়ন্ত্রণ করে।

৪. হৃদরোগ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আদা

হৃদরোগের বড় ঝুঁকি হলো – উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ রক্তে শর্করা এবং খারাপ কোলেস্টেরল। আদা এগুলো নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখতে পারে।

  • ২০২২ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত আদা খেলে খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) ও ট্রাইগ্লিসারাইড কমে এবং ভালো কোলেস্টেরল (HDL) বাড়ে।
  • আদা রক্তচাপ কমাতেও সহায়তা করে।
  • গবেষণায় দেখা গেছে, ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে দৈনিক ১-৩ গ্রাম আদা ৪ থেকে ১২ সপ্তাহ খেলে রক্তে শর্করা ও কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।

এছাড়া আদা রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি, হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা এবং যৌনস্বাস্থ্য উন্নতিতেও কিছুটা ভূমিকা রাখতে পারে।

৫. মস্তিষ্ক ও ক্যানসার প্রতিরোধে আদা

আদা নিয়ে সাম্প্রতিক গবেষণা আরও কিছু চমকপ্রদ দিক উন্মোচন করেছে।

  • মস্তিষ্কের সুরক্ষা: আদার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মস্তিষ্ককে অক্সিডেটিভ ক্ষতিহাত থেকে রক্ষা করতে পারে, যা আলঝেইমারসহ নানা নিউরোডিজেনারেটিভ রোগ প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে।
  • ক্যানসার গবেষণা: পরীক্ষাগারে দেখা গেছে, আদা কিছু ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি ধীর করতে পারে। যদিও এখনো মানুষের উপর পর্যাপ্ত গবেষণা হয়নি, তবে সম্ভাবনা রয়েছে।

সতর্কতা

আদা সাধারণত খাবার বা চা হিসেবে খাওয়া নিরাপদ। তবে কিছু বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি।

  • প্রতিদিন ৪ গ্রামের বেশি আদা খেলে অম্বল, পেট ফাঁপা, ডায়রিয়া বা মুখে জ্বালাভাব হতে পারে।
  • যারা ব্লাড থিনার (যেমন: Warfarin, Aspirin) খাচ্ছেন, তাদের সাবধানে আদা খাওয়া উচিত, কারণ রক্তপাতের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
  • ডায়াবেটিস বা রক্তচাপের ওষুধ যারা খান, তাদের ক্ষেত্রে আদা ওষুধের কার্যকারিতা বাড়িয়ে দিতে পারে, ফলে রক্তচাপ বা শর্করা অতিরিক্ত কমে যেতে পারে।
  • গর্ভবতী নারীরা উচ্চ মাত্রায় আদা খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।

উপসংহার

আদা শুধু রান্নার স্বাদ বাড়ায় না, এটি প্রাকৃতিক এক শক্তিশালী ওষুধও বটে। বমিভাব কমানো, প্রদাহ নিয়ন্ত্রণ, ব্যথা উপশম, হৃদরোগ প্রতিরোধ থেকে শুরু করে মস্তিষ্ক ও ক্যানসার প্রতিরোধে সম্ভাব্য ভূমিকা রাখে। সব মিলিয়ে আদা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আশ্চর্যজনক এক উপকারি মসলা।

তাই খাবারের সাথে কিংবা এক কাপ গরম আদা-চা হিসেবেই হোক, নিয়মিত সীমিত পরিমাণে আদা খেলে প্রাকৃতিক উপায়ে শরীর সুস্থ রাখা যায়।

লেখাটি ভালো লেগে থাকলে আমাকে ফেসবুকে অনুসরণ করতে পারেন। এছাড়াও আমি টুইটারে এবং ইন্সটাগ্রামে সক্রিয় আছি।

নাম: Administrator

আমার নাম মেহেদী হাসান। আমি একজন শিক্ষার্থী। নিজে শিখতে এবং অপরকে শেখাতে ভালোবাসি।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করার মাধ্যমে, আপনি আমার পরিষেবার শর্তাবলী এবং গোপনীয়তার নীতি মেনে চলবেন।

MehediBOT Icon
কণ্ঠস্বর