রাসেল’স ভাইপার কী?

রিপোর্ট
প্রশ্ন

অনুগ্রহ করে সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করুন কেন আপনি মনে করেন এই প্রশ্নটি রিপোর্ট করা উচিত।

রিপোর্ট
বাতিল করুন

প্রশ্ন: রাসেল’স ভাইপার কী?

উত্তর ( 1 )

  1. অনুগ্রহ করে সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করুন কেন আপনি মনে করেন এই উত্তরটি রিপোর্ট করা উচিত।

    রিপোর্ট
    বাতিল করুন

    সঠিক উত্তর: রাসেল’স ভাইপার সম্পর্কে নিচে বিশ্লেষণ করা হলো।

    ভূমিকা

    রাসেল’স ভাইপার (Daboia russelii), যাকে আমরা সাধারণত চন্দ্রবোড়া নামে চিনি, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বিষাক্ত সাপ। এই সাপের দেহের রং হালকা বাদামি থেকে গাঢ় বাদামি পর্যন্ত হতে পারে এবং এর শরীরে স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান গোলাকার ছাপ থাকে। মাথাটি ত্রিভুজাকৃতির এবং চোখের পাতা বড় ও গোলাকার। একটি পূর্ণবয়স্ক রাসেল’স ভাইপার সাধারণত ১ থেকে ১.৮ মিটার দীর্ঘ হয়।

    রাসেল’স ভাইপারের বাসস্থান

    রাসেল’স ভাইপার সাধারণত মাঠ, ঘাস জমি, ঝোপঝাড়, বনাঞ্চল, এবং চাষের জমিতে পাওয়া যায়। বর্ষাকালে এরা জলাভূমিতে বসবাস করতে পছন্দ করে এবং প্রায়ই গ্রামীণ এলাকায় মানুষের কাছাকাছি চলে আসে।

    রাসেল’স ভাইপারের বিস্তৃতি

    ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নেপাল এবং শ্রীলঙ্কার বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে এদের পাওয়া যায়।

    রাসেল’স ভাইপারের স্বভাব

    রাসেল’স ভাইপার নিশাচর সাপ, যার ফলে এরা রাতের বেলা বেশি সক্রিয় থাকে। এরা প্রধানত ইঁদুর, ছোট পাখি, টিকটিকি এবং ব্যাঙ খেয়ে বেঁচে থাকে। এরা খুবই আক্রমণাত্মক এবং বিরক্ত করলে হিংস্র হয়ে উঠতে পারে। হুমকি অনুভব করলে এরা শরীরের সামনের অংশ তুলে ফেলে এবং উচ্চস্বরে হিস হিস শব্দ করে সতর্কবার্তা দেয়।

    রাসেল’স ভাইপারের প্রজনন

    রাসেল’স ভাইপার সাপ ডিম পাড়ে না, বরং সরাসরি বাচ্চা দেয়। সাধারণত প্রজনন মৌসুমে, বিশেষ করে মে মাসে, একটি স্ত্রী সাপ ২০ থেকে ৪০টি বাচ্চা জন্ম দেয়। বাচ্চাগুলি জন্মের পর থেকেই স্বাবলম্বী হয় এবং দ্রুত শিকার ধরতে সক্ষম হয়।

    রাসেল’স ভাইপারের বিষ

    রাসেল’স ভাইপারের বিষ অত্যন্ত হেমোটক্সিক, যা রক্তের লোহিত কণিকা ধ্বংস করে এবং রক্ত জমাট বাঁধায়। কামড়ানোর পর ব্যথা, ফোলা, এবং রক্তপাত শুরু হয়। বিষক্রিয়া দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং কিডনি ও ফুসফুসের ক্ষতি করে। দ্রুত চিকিৎসা না করলে এটি মৃত্যুর কারণ হতে পারে। এদের কামড়ের পর দ্রুত অ্যান্টিভেনম প্রয়োগ করতে হয়।

    রাসেল’স ভাইপারের অবস্থা

    রাসেল’স ভাইপার সাপের সংখ্যা কিছুটা হ্রাস পাচ্ছে, তবে এখনও এরা বিপদগ্রস্ত তালিকায় নেই। বনাঞ্চল ধ্বংস এবং মানুষের ক্রমবর্ধমান অবস্থানের ফলে এদের আবাসস্থল সংকুচিত হচ্ছে। তবে, এরা এখনও প্রচুর সংখ্যায় দেখা যায় এবং এদের সংরক্ষণে বিশেষ পদক্ষেপ প্রয়োজন।

    উপসংহার

    রাসেল’স ভাইপার, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বিষধর সাপ, তার হিংস্রতা এবং বিষক্রিয়ার কারণে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

    যদিও এই সাপটি সাধারণত মানুষের থেকে দূরে থাকে, তবু এর কামড় মারাত্মক হতে পারে। তাই, এই সাপ সম্পর্কে সচেতনতা এবং দ্রুত চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

    রাসেল’স ভাইপার প্রাকৃতিক পরিবেশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তাই এদের সংরক্ষণ ও সঠিক ব্যবস্থাপনা করা জরুরি। সচেতনতা বৃদ্ধি এবং পরিবেশ সংরক্ষণ আমাদের সকলের দায়িত্ব।

    সেরা উত্তর

উত্তর প্রদান করুন