ইসকন শব্দের অর্থ কী?
রিপোর্টপ্রশ্ন
অনুগ্রহ করে সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করুন কেন আপনি মনে করেন এই প্রশ্নটি রিপোর্ট করা উচিত।
প্রশ্ন: ইসকন শব্দের অর্থ কী?
Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.
Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit.Morbi adipiscing gravdio, sit amet suscipit risus ultrices eu.Fusce viverra neque at purus laoreet consequa.Vivamus vulputate posuere nisl quis consequat.
উত্তর ( 1 )
অনুগ্রহ করে সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করুন কেন আপনি মনে করেন এই উত্তরটি রিপোর্ট করা উচিত।
সঠিক উত্তর: ইসকন শব্দের অর্থ নিচে বিশ্লেষণ করা হলো।
ভূমিকা
ইসকন (ISKCON) শব্দটি ধর্মীয় সংগঠন হিসেবে পরিচিত হলেও, এটি নিয়ে নানা বিতর্ক ও সমালোচনা রয়েছে। বৈষ্ণব ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে গঠিত এই সংগঠনটি তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য প্রায়শই বিতর্কে জড়িয়ে থাকে। ইসকন শুধুমাত্র একটি আধ্যাত্মিক প্রতিষ্ঠান নয়, এটি ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক এবং আর্থিক দিক দিয়ে এক প্রভাবশালী সংগঠন, যার কর্মকাণ্ড বিভিন্ন জায়গায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এই লেখায় ইসকনের অর্থ, ইতিহাস, কার্যক্রম এবং এর বিতর্কিত দিকগুলো বিশদভাবে আলোচনা করা হবে।
ইসকন শব্দের পূর্ণরূপ ও অর্থ
ইসকন শব্দটি ইংরেজি International Society for Krishna Consciousness এর সংক্ষিপ্ত রূপ। বাংলায় এর অর্থ “কৃষ্ণভাবনামৃত আন্তর্জাতিক সংস্থা”। ইসকনের মূল উদ্দেশ্য হলো বৈষ্ণব ধর্ম প্রচার এবং শ্রীকৃষ্ণের প্রতি ভক্তি জাগ্রত করা। তবে এই নামের আড়ালে তারা বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে, যা শুধুমাত্র ধর্মীয় উদ্দেশ্যে সীমাবদ্ধ নয়।
ইসকনের প্রতিষ্ঠা ও ইতিহাস
ইসকন প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬৬ সালে নিউইয়র্কে। এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন এ. সি. ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ। তিনি বৈষ্ণব ধর্মের ভক্তি আন্দোলনকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য এই সংগঠনটি গড়ে তোলেন। শুরুর দিকে এটি আধ্যাত্মিকতা এবং ধর্মীয় চেতনা ছড়ানোর উদ্দেশ্যে কাজ করলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর কার্যক্রমে অর্থনৈতিক এবং সাংগঠনিক স্বার্থ যুক্ত হয়েছে বলে সমালোচকরা মনে করেন।
ইসকনের দর্শন ও কার্যক্রম
ইসকনের দর্শন হলো ভক্তি যোগ, যা শ্রীকৃষ্ণের প্রতি আত্মসমর্পণ এবং ভক্তি দ্বারা জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য খুঁজে পাওয়া। তাদের কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে:
– মন্দির প্রতিষ্ঠা: সারা বিশ্বে ইসকন মন্দির স্থাপন করেছে।
– গীতাপাঠ ও ধর্মীয় গ্রন্থ বিতরণ: ইসকন প্রচুর সংখ্যায় ধর্মীয় বই প্রকাশ করে, যা তাদের আয়ের একটি প্রধান উৎস।
– প্রসাদ বিতরণ: সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করে তাদের দিকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা।
– ভক্তিমূলক সঙ্গীত: ধর্মীয় গানের মাধ্যমে মানুষকে প্রভাবিত করা।
ইসকনের বিতর্কিত দিক
ইসকনের কর্মকাণ্ড নিয়ে সবচেয়ে বেশি সমালোচনা হয় তাদের আচার-আচরণ, আর্থিক স্বচ্ছতার অভাব এবং সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গির জন্য।
– ধর্মের নামে ব্যবসা: ইসকন বহু স্থানে মন্দির নির্মাণের নামে অর্থ সংগ্রহ করে, যা পরবর্তীতে স্বচ্ছভাবে ব্যবহার করা হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে।
– ভক্তদের নিয়ন্ত্রণ: ইসকন তাদের ভক্তদের মানসিকভাবে প্রভাবিত করে তাদের ব্যক্তিস্বাধীনতা হরণ করে।
– সংস্কৃতির বিকৃতি: স্থানীয় সংস্কৃতিকে উপেক্ষা করে নিজেদের সংস্কৃতি চাপিয়ে দেওয়া।
সমালোচনার কারণ ও নেতিবাচক প্রভাব
ইসকনকে ঘিরে বেশ কিছু বড় ধরনের বিতর্ক দেখা যায়, যেমন:
– অর্থনৈতিক দুর্নীতি: তাদের আয়ের উৎস এবং অর্থ ব্যবহারের বিষয়ে স্বচ্ছতার অভাব।
– ধর্মীয় বিভ্রান্তি: বৈষ্ণব ধর্মকে তারা তাদের নিজস্ব ব্যাখ্যায় উপস্থাপন করে, যা প্রকৃত ধর্মীয় চেতনার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
– সামাজিক অস্থিরতা: বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি।
– অসন্তোষজনক আচরণ: ইসকনের ভক্তরা প্রায়ই অন্যান্য ধর্মীয় গোষ্ঠীর প্রতি অসহিষ্ণুতা প্রদর্শন করে।
ইসকন নিয়ে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি
সমাজে ইসকন সম্পর্কে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। কেউ কেউ তাদের আধ্যাত্মিক কার্যক্রমের প্রশংসা করলেও, অনেকেই তাদেরকে এক ধরণের ধর্মীয় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখে। ইসকনের ভক্তদের দ্বারা পরিচালিত কিছু কর্মকাণ্ড সাধারণ মানুষের মধ্যে নেতিবাচক ধারণা তৈরি করেছে।
ইসকনের ভবিষ্যৎ ও সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা
ইসকন যদি সত্যিকার অর্থে আধ্যাত্মিকতার প্রচার করতে চায়, তবে তাদের বর্তমান কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা এবং সততা নিশ্চিত করতে হবে। তাদের বিতর্কিত কার্যক্রম বন্ধ করে প্রকৃত ধর্মীয় মূল্যবোধের উপর গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
উপসংহার
ইসকন একটি আন্তর্জাতিক ধর্মীয় সংগঠন হলেও তাদের কর্মকাণ্ড এবং উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ধর্মের নামে বিভ্রান্তি সৃষ্টি, অর্থনৈতিক দুর্নীতি এবং সাংস্কৃতিক চাপিয়ে দেওয়ার মতো কর্মকাণ্ড তাদের ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ইসকন সম্পর্কে যথাযথ বিশ্লেষণ এবং সচেতনতা বৃদ্ধি প্রয়োজন, যাতে ধর্মের নামে কোনো ধরণের অপব্যবহার না হয়। সংগঠনটি যদি সত্যিকার অর্থে আধ্যাত্মিক চেতনার প্রচার করতে চায়, তবে তাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা জরুরি।
আরো জানুন: চর্যাপদের বিষয়বস্তু কী?